
রিয়াজ ওসমানী
১৪ মে ২০২১
ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মাঝে দেশ, জমি ও বাসস্থান নিয়ে এই দুরূহ সমস্যা ও সংঘাতটির সমাধান সকলেরই জানা। এবং অনেকের বিশ্বাস না হলেও এটা সত্যি যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় (যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল সহ) এই সমাধানটির সম্বন্ধে একমত। কিন্তু এই সমাধানে পৌঁছানোর পথটি এখনো কেউ সঠিকভাবে খুঁজে পায়নি।
এর কারণ হচ্ছে ১) ইসরায়েলিরা এবং ফিলিস্তিনিরা দুটি দেশের মধ্যেকার চূড়ান্ত সীমানা নিয়ে একমত হতে পারেনি যার কারণ বহুবীদ; ২) ফিলিস্তিনিদের মাঝে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণে হামাস নামের যেই সংগঠনটি, সেটি ইসরায়েলের অস্তিত্বই এখনো মানতে পারেনি এবং ইসরায়েলকে রকেট মেরে ধ্বংস করে দেয়াই তাদের উদ্দেশ্য; ৩) ইসরায়েলিদের মধ্যেই কিছু চরমপন্থি ইহুদি আছে যারা ফিলিস্তিনিদেরকে কিছুতেই জায়গা-জমি ছেড়ে দিতে নারাজ।
কে কার জায়গা দখল করে আছে এই প্রশ্ন এখন অপ্রাসঙ্গিক৷ কে আদিকাল থেকে এই অঞ্চলে বাস করছে সেটাও অপ্রাসঙ্গিক (যদিও উত্তরটা জেনে আপনারা আশ্চর্য হতে পারেন)। ইতিহাসের কারণে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের আজকের এই করুণ দশা। ফিলিস্তিনিদের মুক্তি ও একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বিশ্ববাসীর দাবী। ইসরায়েলিদের নিরাপত্তাও একটি ন্যায্য দাবী (সকল দেশের ক্ষেত্রেই তাই)।
এই আঙ্গিকেই এই সংঘাতটি পর্যালোচনা করতে হবে। ধর্মীয় অনুভূতি ও ইহুদি বিদ্বেষ দিয়ে এই পরিস্থিতিটি পর্যালোচনা করা যাবে না। আর বামপন্থীরা যখন এখানে পুঁজিবাদী আগ্রাসনের প্রসঙ্গ টেনে নিয়ে আসেন তখন তাদেরকে থামিয়ে দেবেন। মুসলমানদের উপর ইহুদি ও খ্রিস্ট ধর্মালবীদের আগ্রাসন হিসেবেও এই সংঘাতটি দেখা যাবে না যদিও ঠিক সেইভাবেই আমাদেরকে ছোট বেলায় সব শিখিয়ে দেয়া হয়েছে।
আমাদেরকে নিরপেক্ষভাবে দুই পক্ষকেই সমর্থন করতে হবে। কারণ দুই পক্ষেরই এখানে যৌক্তিক দাবী আছে। আর সেই কারণেই হামাস নামক গোষ্ঠীটি ইসরায়েলি নাগরিকদের উপর হামলা চালালে এবং তারপর ইসরায়েল প্রতিশোধ হিসেবে গাজার উপর বোমা মারলে দুই আক্রমণকেই সমানভাবে নিন্দা করতে হবে। একপেশে নিন্দা করা দিন শেষ।
ইসরায়েলিদের অধীনে ফিলিস্তিনিদের অমানবিক অবস্থার ইতি কীভাবে টেনে নিয়ে আসা যাবে, সকলের মনোযোগ শুধু সেই দিকেই দিতে হবে। সেটা ইসরায়েলের ধ্বংস নয়, বরং ইসরায়েলের পাশেই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অস্থিত্ব, যার নাম হবে প্যালেস্টাইন।
*********************