
রিয়াজ ওসমানী
২২ ডিসেম্বর ২০২০
বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম আর আরবি মাধ্যম (মাদ্রাসা), এই তিন ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশকে তিন ভাগে ভাগ করে ফেলেছে। কারণ এই তিনটা মাধ্যম থেকে তিন রকমের মানুষ বের হচ্ছে যা আমাদের জাতিগত সত্তার এবং ঐক্যের পরিপন্থী৷
মাদ্রাসা শিক্ষা কোনো যুগোপযোগী শিক্ষা নয়। এখান থেকে বের হয় ধর্মান্ধ আর সাংষ্কৃতিকভাবে প্রতিবন্ধী কিছু মানুষ। শুধু কোরাআন মুখস্ত করে কি আর বাকি কিছু জানা যায়? তার উপর ধর্মের আড়ালে এরা শিখে পাকিস্তান প্রেম – বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস আর চেতনা সম্বন্ধে এরা একেবারেই অজ্ঞ। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ইসলাম, বাউল সঙ্গীত ইত্যাদির কথা না হয় বাদই দিলাম। আর কওমি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিতই করা হয়েছে নিরিহ বালকদেরকে ধর্ষণ করার জন্য, তাদের উপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতন চালানোর জন্য এবং তাদেরকে পরবর্তী সময়কার হিংস্র জঙ্গির রূপ দেয়ার জন্য।
ইংরেজি মাধ্যম থেকে বের হয় স্বদেশ, স্বীয় ভাষা ও স্বীয় সংষ্কৃতি সম্বন্ধে অজ্ঞ এবং সেগুলোর প্রতি অবমাননাকারী কিছু নাক উঁচু ফিরিঙ্গি (পাঁচ মিনিট এদের বাংলা বচন শুনে নিন, তাহলেই বুঝবেন)। বাংলাদেশের সড়ক আন্দোলনে এদেরকে কখনই পাওয়া যাবে না। অথচ এরাই সবাই মিলে বাংলা মাধ্যমের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে “ক্ষ্যাত” উপাধি দিয়ে থাকে এবং নিজেদেরকে সবার চেয়ে উন্নতর একটা প্রজাতি হিসেবে গণ্য করে। এদের উদ্দেশ্য কেবল মাত্র পাস করে বিদেশে পাড়ি জমানো। বাংলাদেশে এদেরকে আবাদ করাই হয় তাদের জন্ম ভুল দেশে হয়েছে এটা তাদেরকে বিশ্বাস করিয়ে। বাংলাদেশে বাংলা মাধ্যমের ছাত্র-ছাত্রীরা ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্র-ছাত্রীদের চোখে ছোট হবে – এটা কিছুতেই আর চলতে দেয়া যায় না।
এর সব কিছুর সমাধান হলো বাংলা মাধ্যমে একটি অতি উন্নত, আধুনিক, সার্বজনীন এবং সম্পূর্ণ একমুখি, ধর্মনিরপেক্ষ, বাংলা সাহিত্য ও সংষ্কৃতিমনা, কারিগর ও প্রযুক্তি ভিত্তিক এবং বিজ্ঞানমনষ্ক শিক্ষা ব্যবস্থা যা সবার জন্য সমানভাবে লভ্য হবে৷ এখানে আধুনিক উপায়ে একটি দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে সবাইকে ইংরেজিও শেখানো হবে। এই নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা পর্যায়ক্রমে গড়ে তুলতে হবে প্রতি বছর সরকারি বাজেটের ৫% এই খাতে ব্যয় করে। এবং এই বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থাটা গড়ে তুলতে হবে এই লক্ষ্য নিয়ে যে অভিভাবকরা সেচ্ছায়েও কোনো দিন তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে মাদ্রাসা বা ইংরেজি মাধ্যমে আর পাঠাবে না, কারণ সেগুলোর আর প্রয়োজনই পড়বে না।